হাজার বছর ধরে পানিতে ভাসমান জাতি

বর্ণনা

পানির উপরে ভাসমান জাতির কথা আমরা কম-বেশি সবাই জানি। বিশেষ করে আমাদের দেশে বেদে জাতিগোষ্টি ভেসে বেড়িয়ে পানির উপরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তবে তারা বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ডাঙ্গাতে উঠে আসে। তাদের জীবন-জীবিকা দেখে আমরা মাঝে মধ্যে বিস্মিত হয় যে, আধুনিক এই সভ্যতাতে কিভাবে তারা ভেসে ভেসে জীবন-যাপন করে। কিন্তু আপনি পৃথিবীর একটি জাতির কথা শুনলে আরও বেশী অবাক হয়ে যাবেন। কেননা তারা হাজার হাজার বছর ধরে পানিতে ভেসে বেড়াচ্ছে।

তো বন্ধুরা আজকের আয়োজনে জানাব সে জাতিটি সম্পর্কে যারা খ্রিষ্টের জন্মেরও কয়েক হাজার বছর আগে থেকে পানিতে ভেসে ভেড়াচ্ছে। চলুন জেনে নিই সে জাতিটি সম্পর্কে বিস্তারিত সব তথ্য :

বিশ্বের সর্বপ্রাচীন সুমেরীয় সভ্যতার অবস্থান ছিল বর্তমান ইরাকের দক্ষিণাঞ্চল। যে জায়গা সংলগ্ন বর্তমানে ‘মার্শ আরব’ অবস্থিত। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে ইরাকের চারিদিকে ধু ধু মরুভূমির মধ্যে তাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর সংযোগস্থলে একটি পরিবেশবান্ধব ভাসমান গ্রাম গড়ে উঠেছিলো। এখানকার বাসিন্দারা ‘মার্শ আরব’ ও ‘মা ডান’ উপজাতির। ইংরেজী Marsh শব্দের অর্থ জলাভূমি। মরুভূমির মধ্যে জলাভূমি আর সেখানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপের মত ভাসমানভাবে বসবাস করা জনগোষ্ঠিটির জীবন-যাপন আর ঘরবাড়িগালো যেন আশ্চর্যের বিষয়। হাজার বছর ধরে জল আর প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক আশ্চর্য জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে তারা। এদের বাড়িগুলো তৈরি হয় নলখাগড়া জাতীয় উদ্ভিদ দিয়ে।

জলাভূমিতে জন্মানো নলখাগড়া থেকে তৈরি বাড়িগুলোতে কাঠ বা পেরেক ব্যবহার করা হয় না। বাড়িগুলো তৈরী হয় একেকটা দ্বীপের উপর, যে দ্বীপগুলো আবার তৈরী হয় খড়খুটো আর মাটি জমা করে। ফলে মার্শ আরব অধিবাসীদের গ্রামগুলো উপর থেকে দেখলে হাজার হাজার দ্বীপের সমষ্টি বলে মনে হয়। আর এই কারণেই এই জায়গাকে বলা হয় ‘ভেনিস অব মেসোপটেমিয়া’। দ্বীপগুলো যেন ভেসে না যায় সেজন্য নৌকার মত নোঙর করে রাখা হয়। এছাড়া পুরো বাড়িটাই খুব সহজে খুলে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া যায়। দ্বীপের উপর তৈরী এ বাড়িগুলো ২৫ বছর পর্যন্ত টিকে।

মার্শ আরব অধিবাসীরা মূলত শিয়া মুসলিম। পেশাগতভাবে তারা মূলত দুই ভাগে বিভক্ত, একদল মোষ লালন পালন করে, আরেকদল জলাভূমিতে ধান, যব আর গমের চাষ করে। এপ্রিল মাসের দিকে জলাভূমিতে পানির গভীরতা কম থাকাকালীন ফসলের চারা রোপণ করে। এছাড়া জলাভূমিতে মাছ ধরেও অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে। এছাড়াও গত শতাব্দী থেকে মার্শ আরবেরা নলখাগড়া দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কার্পেট বুননকে তাদের পেশা বানিয়ে নিয়েছে।

Total Ratings:

আরো দেখতে পারেন

Generic placeholder image
ব্রিটিশ রাণীর মুকুটের দাম কত
Generic placeholder image
বিশ্বের কুখ্যাত জেলখানাগুলো পর্ব-১
Generic placeholder image
ভারতের বিখ্যাত প্রাচীন মন্দিরগুলো
Generic placeholder image
বিশ্বের ভয়ংকর ৫ জন নারী সিরিয়াল কিলার
Generic placeholder image
বিশ্বের কুখ্যাত জেলখানাগুলো পর্ব-২
Generic placeholder image
যে দেশগুলোতে ক্রিসমাস উদযাপন নিষিদ্ধ
Generic placeholder image
পৃথিবীর বিপজ্জনক বিমানবন্দরগুলো পর্ব-২
Generic placeholder image
ব্রিটেনের রাণী কতটা ক্ষমতাধর
Generic placeholder image
বুর্জ খলিফা সম্পর্কে অজানা তথ্যগুলো
Generic placeholder image
গিনেস বুকে বাংলাদেশের রেকর্ডগুলো